হাফিজুর রহমান লাভলু, শেরপুর: ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসী মালার সুগদ্ধে’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপুর্ব নৈস্বর্গিক শোভামন্ডিত শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে পর্যটনের অপার সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্রটি।গজনী অবকাশ ও মধুটিলা নামে জেলায় যে দুটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর চেয়ে এই স্থানের উচু নিচু লাল পাহাড়ের নয়ানাভিরাম মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দয্য উপভোগ করে ভ্রমণ পিয়াসীরা উচ্ছসিত ও আনন্দিত হবেন বলেন বলে স্থানীয়রা জানান। তাই এর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার জোড় দাবি জানান তারা।
জানা গেছে, শেরপুর জেলা প্রশাসন সরকারি নির্দেশনায় দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে নতুন বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করেন। এরই প্রেক্ষিতে তৎকালিন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ২২০.৭৭ একর পাহাড়ি বনভুমি নিয়ে নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহন করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থান নির্বাচন করে গত বছরের ৫ এপ্রিল তৎকালিন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ওইস্থানে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একই সাথে ওই পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় মাটি কাটার কাজ ও একটি গেইট নির্মাণ করা হয়। এলাকাবাসী জানান, এখানে নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসবেন। এতে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব পাবে অন্যদিকে স্থানীয়দের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান। তাই তারা দ্রুত ওই এলাকায় পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানান।
ওই এলাকার বাসিন্দা হারেজ আলী বলেন, আমাদের পুর্বদিকে আছে নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও পশ্চিম দিকে আছে মধুটিলা ইকোপার্ক। আমরা এর মাঝখানের এলাকার বাসিন্দা। এখানের মানুষের নেই কোন কর্মসংস্থান। তাই এখানে যদি নতুন পর্যটন কেন্দ্রটি পর্যটকদের আকর্ষণ ছাড়াও স্থাপন করা হয় তাহলে এখানের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অপর বাসিন্দা রাশিদা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমাদের চলার কোন পথ নেই। আমরা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন থেকে লাকড়ি কুড়িয়ে বিক্রি করে কষ্ট করে সংসার চালাই। দাওধারা গারো পাহাড়ে যদি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হয় তাহলে আমরা কমপক্ষে পানি বিক্রি করে হলেও আমাদের সংসার চালাতে পারবো। তাই সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি, চিত্তবিনোদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে স্থানীয় বাসিন্দা হোসেন আলী, নুর মোহাম্মদ, বিশ্ব কোচ ও নুরুল হকসহ অনেকেই দাওধারা গারো পাহাড় পর্যটন কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান সরকারের কাছে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, দাওধারা গারো পাহাড়ে ২২০.৭৭ একর খাস জমি উদ্ধার করে নতুন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু উন্নয়নমুলক কাজ করা হয়েছে। পরিবেশের সাথে মিল রেখে কাজ এগিয়ে চলছে। জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুয়ায়ী সম্ভাব্য সময়ের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ করা হবে।