অনলাইন ডেস্ক : মেট্রোরেলের ভাড়ায় ভ্যাট মওকুফ করা হবে না। যাত্রীর কাছ থেকে সরকার কীভাবে তা আদায় করবে, এটি সুপারিশে কমিটি গঠন করা হবে। এর আগ পর্যন্ত মেট্রোরেলে বর্তমান ভাড়াতেই যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) একাংশ ২০২২ সালে ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। পরের বছরে দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল অংশে ট্রেন চলছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এনবিআর ভাড়ায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে। তবে ডিএমটিসিএলে আবেদনে সরকার ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছাড় দিয়েছিল।
এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, কারিগরি দিক বিবেচনা করে কমিটি সুপারিশ করবে কীভাবে ভ্যাট বাস্তবায়ন করা হবে। এর আগ পর্যন্ত মেট্রোরেলে বর্তমান ভাড়াতেই যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
মেট্রোরেলের ভাড়ায় ভ্যাট আরোপ না করতে গত ১৭ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনআবিআর) উপানুষ্ঠানিক পত্র দিয়েছিলেন সচিব। জবাবে এনআবিআর জানায়, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থের জোগানে, স্বল্প উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়া এবং কর-জিডিপি অনুপাত ঠিক রাখতে ভ্যাট মাফের সুযোগ নেই।
সভা সূত্র জানিয়েছে, ভ্যাট আরোপ না করতে এনবিআরকে ফের অনুরোধ জানায় মেট্রোরেলের নির্মাণ এবং পরিচালনায় থাকা সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএল। তবে এনবিআরের সদস্য (ভ্যাট) জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিংবা অর্থ বিভাগ ভ্যাট ছাড় দিতে পারে। এ ছাড়া সুযোগ নেই।
কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ স্বাক্ষরিত চিঠির সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্যাট না নিলেও ১ জুলাই থেকে ডিএমটিসিএল আদায়কৃত ভাড়ার ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেওয়া হচ্ছে। ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, ১০০ টাকার মধ্যে ৮৭ টাকা কোম্পানি পাচ্ছে। বাকি ১৩ টাকা ভ্যাট হিসেবে এনবিআরের অর্থনৈতিক কোডে জমা হচ্ছে।
মেট্রোরেলের বেশিরভাগ টিকিট ভেন্ডিং মেশিনে ইস্যু হওয়ায়, নগদ টাকার লেনদেন কম। ভাঙতি সুবিধার্থে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ এর গুনিতক হিসাবে। ভ্যাট আরোপ হলে ২০ টাকার ভাড়া হবে ২৩ টাকা, ৩০ টাকার ভাড়া হবে ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা, ১০০ টাকার ভাড়া হবে ১১৫ টাকা। ১০ এর গুনিকত নয়, এমন অঙ্কের ভাড়া ভেন্ডিং মেশিনে আদায়ের সুযোগ নেই। এ সুবিধা চালু করতে পুরো প্রক্রিয়া বদলাতে হবে। ১০ এর গুনিতক ঠিক রাখতে হলে ভাড়া বাড়বে।
সভায় ডিএমটিসিএল প্রতিনিধিরা বলেন, ভাড়ার আয় থেকে ভ্যাট দিতে হলে কোম্পানির লোকসান বাড়বে। কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সংকট হবে। আবার যাত্রীর কাছ থেকে ভ্যাট আদায় হলে ভাড়া বাড়বে।