অনলাইন ডেস্ক : হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ১৮০ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এসব হজযাত্রীর মধ্যে মারা গেছেন আট বাংলাদেশি।
শনিবার সকালে হজ পোর্টালে আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার রাত ২টা পর্যন্ত মোট ৫৩ হাজার ১৮০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন ৪৯ হাজার ৪৩৩ জন। এখন পর্যন্ত হজকেন্দ্রিক সৌদি আরব যাওয়ার ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে ১৩৬টি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত হজযাত্রার এ ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন থেকে শুরু হবে ফিরতি ফ্লাইট। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।
এদিকে হজের আনুষ্ঠানিকতার বাকি আর দুই সপ্তাহ। এরপরও কিছু এজেন্সির মোট ২৪৭ জন হজযাত্রীর ভিসা এখনো হয়নি। তবে তাদের ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে এজেন্সিগুলোকে চাপে রেখেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা না করায় গত বৃহস্পতিবার বিকালে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনজুরুল হকের সই করা চিঠিতে ৯টি হজ এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
শোকজ পাওয়া ওই এজেন্সিগুলো হলো মেহমান ট্রাভেলস, গ্লোবাল ভিশন, খাদিম ওভারসিজ, ফিকাস ট্রাভেলস, দেশ ভ্রমণ ট্রাভেলস, মোবাশ্বেরা ট্রাভেল, হলি দারুন্নাজাত, এমএস সালসাভিল ও নর্থ বাংলা হজ অ্যাজেন্সি।
এসব এজেন্সির অধীনে এখনো ভিসা হয়নি ২৯২ জন হজযাত্রীর। একই সঙ্গে তাদের বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ভিসা করার নির্দেশ দেওয়া হয় চিঠিতে। অন্যথায় এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানায় মন্ত্রণালয়। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে এখনো তাদের সবার ভিসা আবেদন সম্পন্ন হয়নি।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ অনুবিভাগ) মো. মতিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার যে ৯ এজেন্সিকে চিঠি দিয়েছিলাম তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং চাপ দিচ্ছি। যেন তারা দ্রুতই নিবন্ধন শেষ করেন। তারা আমাদের জানিয়েছে তাদের ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে।’
শুক্রবার সকাল ১০টায় হজ অফিসের প্রকাশিত তথ্যমতে, এ বছর গাইডসহ সরকারি-বেসরকারি মিলে মোট ৮৫ হাজার ১৮৫ জনের নিবন্ধন হলেও ভিসা হয়েছে ৮৪ হাজার ৯৩৮ জনের, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৮৪ হাজার ৯২৬ অর্থাৎ এই এক দিনে মাত্র ১২টি ভিসা ইস্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভিসা হয়নি এমন কেউ আমাদের এখানে এখনো অভিযোগ করেননি। তবে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছেন এবং মন্ত্রণালয় সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
এ বছরের নিবন্ধিতরা ছাড়াও হজে পাঠানোর নামে ২০২৩ সালে ৪৪ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা সংগ্রহ করে ‘সাজিদ হজ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। টাকা নিয়ে ওই বছর তাদের প্রাক-নিবন্ধন করলেও চূড়ান্ত নিবন্ধন না করেই আত্মগোপনে চলে যায় এর মালিক। যার কারণে তারা (হজযাত্রী) হজে যেতে পারেননি। এরপর ভুক্তভোগীদের মামলায় গ্রেপ্তার হন এজেন্সির মালিক। পরে সেসব হজযাত্রীকে চলতি বছর (২০২৪) হজে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামিনে বের হন। কিন্তু বের হয়ে ফের আত্মগোপনে চলে গেছেন তিনি। এ অবস্থায় এজেন্সি মালিককে গ্রেপ্তার ও হজে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে মতিউল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে এই এজেন্সির বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। কিন্তু ভুক্তভোগীরা এজেন্সি মালিকের সঙ্গে সমঝোতা করায় ওই এজেন্সি মালিক ছাড়া পান। ফলে এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তারা আবার আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে হয়তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।’
উল্লেখ্য, এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন বাংলাদেশি হজ করতে যাবেন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।