অনলাইন ডেস্ক : বাজার কারসাজি, দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা। সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু করে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক নুরুল হক নুর বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকঘণ্টায় এমপি আনারের হত্যার তথ্য দিলেন অথচ এক যুগ পার হলেও সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার তথ্য দিতে পারেন না। তার মানে সরকার হত্যাকারীদের রক্ষা করছে। দুর্নীতি ও গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করায় সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। জেনারেল আজিজ তার প্রভাব খাটিয়ে তার সন্ত্রাসী ভাইদের রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্ত করেছেন।
নুর বলেন, আজিজের মতো সন্ত্রাসী পরিবারের একজন সদস্যকে সেনা প্রধান কে বানিয়েছে? সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজিরের হাজার কোটি টাকার সম্পদ। সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজিরকে ডিএমপি কমিশনার থেকে র্যাব প্রধান, পুলিশ প্রধান কে বানিয়েছে? এ দায় সরকার ও সরকার প্রধান এড়াতে পারে না। আজিজ, বেনজিরের মতো আরও অনেক দুর্নীতিবাজ,দুর্বৃত্ত আছে হোক সে ব্যবসায়ী ,আমলা সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি, দুর্নীতি, লুটপাট, দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে সামজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত করে রাজপথে তারুণ্যের বিপ্লবে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে হবে। তার জন্য রাজপথের সাহসী নেতৃত্ব প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের মতো তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, সরকার প্রধান ৪০/৪২ টা টেলিভিশন আর পত্র-পত্রিকার সাংবাদিক ডেকে বার বার ভোট, নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার করছে। লুটেরা, চোর, ডাকাতরা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জোরজবরদস্তি করে দেশ চালাচ্ছে। এভাবে দেশ চলতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশ ভাড়া দিয়ে তো ক্ষমতায় থাকবো না। ভাড়া দেবেন কি, দেশ তো ভারতের কাছে বিক্রি করেই ক্ষমতায় আছেন। আপনারা ভারতের ইজারাদার হয়ে দেশ চালাচ্ছে। আর বন্ধুরাষ্ট্র আপনাদের এমপিদের হাড়-মাংস আলাদা করে হত্যা করছে। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না। তাই সরকারকে অনুরোধ করবো এখনও সময় আছে নিজেদের ভুলের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান ,,সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিন।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, দেশটা আজ খাদের কিনারে। সাবেক সেনাপ্রধান, পুলিশ প্রধানদের দুর্নীতি, অপকর্ম আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বাংলাদেশিদের হেয় প্রতিপন্ন করেছে। আজিজ, বেনজীররা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে মাফিয়াতন্ত্র কায়েমে সরকারকে সহযোগিতা করেছে। এখন সরকার বলছে, তাদের দায় নিবেনা। প্রশাসনে আরও যারা আজিজ, বেনজীর আছে এই ঘটনা থেকে তাদের শিক্ষা নেওয়া দরকার। সরকার প্রধান বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে ঘাটি করার প্রস্তাব দিয়েছিলো এক শেতাঙ্গ। আমরা জানতে চাই, ঘটনা সত্যি হলে তার নাম বলেন। আর কারা খ্রিস্টান রাজ্য বানাতে ষড়যন্ত্র করছে? আপনার কাছে তথ্য থাকলে সেগুলো জাতির কাছে খোলাসা করেন, অন্যথায় বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হবে।
গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, এ্যাড.নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সহ সভাপতি বিপ্লব কুমার পোদ্দার, সিনি.যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক খালিদ হাসান, আইন সম্পাদক এ্যাড. শওকত হোসেন, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।