এম এফ ইসলাম, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) উপজেলা প্রতিনিধি : বর্তমান উপজেলা নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত কালীগঞ্জ আ’লীগের নেতা কর্মীরা, বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ,ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পরেছে আওয়ামীগের তৃণমূল পযায়ের নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রতীক ছাড়া আগামী ৮ই মে ২০২৪ অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অত্র উপজেলায় দলটির একাধিক প্রার্থী বর্তমানে নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছে । তাদের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীরা ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পরেছেন। যার ফলে স্থানীয় আ’লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে এক প্রার্থীর সমর্থক অন্য প্রার্থীর সমর্থকের সাথে সংঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্ককা দেখা যাচ্ছে।
এ নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না থাকায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভোটের প্রতি তেমন কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা -কর্মীরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে উঠান বৈঠক, কর্মীসভা, মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে যার যার প্রার্থীর পক্ষে ভোটের অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে নেতা কর্মীরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন দুই সংসদ সদস্য সাবেক ডাকসু ভিপি জনাব আক্তার উজ্জামান ও মহিলা আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি /সভানেত্রী সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি জনাবা মেহের আফরোজ চুমকির সু-নজরের প্রার্থীদের দিকে।
প্রথম ধাপের কালীগঞ্জের উপজেলা নির্বাচনে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছে। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আশরাফী মেহেদী হাসান (দোয়াত কলম), উপজেলা আ’লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব (আনারস) ,সাবেক বিএনপি নেতা এবং সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বর্তমান উপজেলা আ’লীগের সদস্য আমজাদ হোসেন স্বপন (মোটর সাইকেল) প্রতীকে প্রতিদন্দিতা করছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ সাদ্দাম হোসাইন রুবেল পালোয়ান (উড়োজাহাজ), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো.ফারুক ভূঁইয়া (চশমা), উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান (মাইক), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোজাম্মেল হক (টিয়া পাখি), উপজেলা জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহঃ সভাপতি আবু জাফর মুহাম্মদ শামসুল হুদা রিপন (তালা), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি জুয়েনা আহমেদ (হাঁস), জেলা আ’লীগের সদস্য ও সাবেক শর্মিলা রোজারিও (ফুটবল) এবং জেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শর্মীলি দাস মিলি (কলস) প্রতীকে নির্বাচন করছেন।
গত সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-৫ আসনে একের অধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রতি যোগিতার কারনে স্থানীয় দলীয় নেতা কর্মীদের মাঝে সৃষ্টি হওয়া দ্বন্ধ এখনো বিরাজমান। সংসদ নির্বাচনে উপজেলা আ’লীগের দলীয় নেতা কর্মীরা মূলত বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদসদস্য মেহের আফরোজ চুমকি এবং বর্তমান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামানের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করেছেন। এ নিয়ে দুই সংসদ সদস্যের অনুসারীদের মাঝে গত জাডীয় সংসদ নির্বাচন হতে এপর্যন্ত বেশ কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় দুই /তিনশত নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি মামলা হয়। এসকল হামলা-মামলার ঘটনায় স্থানীয় উপজেলা আ’লীগের নেতা-কর্মীদের অভ্যন্তরীন কোন্দল এখন চরমে।
উল্লেখ্য যে,গত সংসদ নির্বাচনে আশরাফী মেহেদী হাসান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আখতারউজ্জামানের পক্ষে এবং হাবিবুর রহমান নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকি’র পক্ষে পক্ষে নির্বাচনী সভা সমাবেশ অংশ গ্রহন করেন।
অপর প্রার্থী আমজাদ হোসেন স্বপন গত সংসদ নির্বাচনে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে এবং জামানত হারায় ,এবার তিনি আ’লীগের একাংশের সমর্থন নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।
গত ২৭ এপ্রিল মোক্তারপুরের ইউনিয়ন এ চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফী মেহেদী হাসানের কর্মী সমর্থকদের নির্বাচনী মিছিলে অপর প্রার্থী আমজাদ হোসেন স্বপনের সমর্থকরা হামলা চালায় বলে খবর পাওয়া যায়।বিশ্বস্থ সুত্রে জানা যায় এতে আশরাফী মেহেদীর দুই সমর্থক আহত হয়।
নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসতেছে প্রতি দ্বন্দ্বি প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তজনাও ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে,যে কোন সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ত্রি-মুখি সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে।