তাইফুর রহমান, নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি : নলছিটি মডেল সোসাইটি এবং সেন্টার ফর ল এন্ড পলিসি এফেয়ার্স ঢাকার সম্মিলিত আয়োজনে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ফিরোজা আমু স্মৃতি পাঠাগারে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শরীরচর্চা, শারিরীক পরিশ্রমের সুযোগ সৃষ্টিতে বিদ্যমান আইন,নীতি পর্যালোচনা প্রতিবন্ধকতা ও করনীয় বিষয়ে ” অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শরীরচর্চা নিশ্চিকরন” শীর্ষক এডভোকেসী সভার আয়োজন করা হয়।
নলছিটি মডেল সোসাইটির সভাপতি আ:কুদ্দুস তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নলছিটি পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আ:ওয়াহেদ খান,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নলছিটি পৌরসভার দুই কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম দুলাল চৌধুরী এবং ফিরোজ আলম খান।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পৌর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জাকির হোসেন মীরবহর, প্রবীন সাংবাদিক আ:কুদ্দুস তালুকদার নান্দিকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইকরামুল করিম মিঠু মিয়া,প্রভাষক মল্লিক মনিরুজ্জামান,উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুলতান আকন,উপজেলার সমাজকর্মী বালী তূর্য, কয়েকজন নারী নেত্রী সহ বিশিষ্ট জনেরা।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার নলছিটি উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন।
এসময়ে বক্তারা তাদের বক্তব্যে রোগ প্রতিরোধে শরীরচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং শরীর চর্চার জন্য একটি নগরীতে একটি পার্কের প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন।সুজন সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন,আমরা জীবন বাচাতে খাই এবং সেই খাদ্য মানব দেহের যাতে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য শারিরীক পরিশ্রম এবং শরীরচর্চার বিকল্প নেই।সাম্প্রতিক সময়ে আরও দেখা যায় প্রায় সকল ভোগ্যপন্যেই ভেজাল মেশানো হচ্ছে যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ভেজাল প্রতিরোধ করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হবার আহবানও জানান তিনি।
নলছিটি উপজেলায় ইকো পার্ক নির্মানের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা সমাজউন্নয়ন কর্মী বালী তূর্য বলেন, নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও বাদ যায় না বলে যে একটি কথা প্রচলিত আছে তা মাথায় রেখেই নগরের পরিকল্পনা করতে হবে।নলছিটি পৌরসভাটি ১৮৬৫ সালে স্থাপিত হয়ে মাঝখানে প্রায় ২৪ বছর ইউনিয়ন পরিষদে নামিয়ে দেয়া হয়েছিলো পরবর্তীতে তা আবার ১৯৮৫ সালে পৌরসভায় ফিরিয়ে আনা হয়।এই প্রায় ১৬০ বছরের মতো সময় কেটে গেলেও আমরা এই নগরের জন্য কোনো ইকো পার্ক নির্মান করতে পারি নি,যেখানে প্রবীন কিংবা শিশুরা শরীরচর্চা করতে পারবে,নির্মল বাতাসের সুযোগ পাবেন।আমরা দীর্ঘদিন যাবত একটি ইকো পার্ক নির্মানের দাবি জানিয়ে এসেছি,এজন্য মাননীয় সংসদ সদস্য মহোদয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দিয়েছি।গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালের মে মাসে জানায় দেশে ১০১ টি পার্ক নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, যার মধ্যে বরিশাল বিভাগ ১৫ টি পার্ক নির্মানের সুযোগ পেতে পারে।সেখান থেকে একটি পার্ক আমাদের এই পুরনো নগরীর জন্য দাবি করে মাননীয় সচিব,মন্ত্রী মহোদয়ের ব্যক্তিগত সহকারী (সরকারি) এবং বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছি।এখন এখানে হাটার জন্য রাস্তা ছাড়া তেমন যায়গা নেই,যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ কারণ গাড়ির ধাক্কায় প্রান যাওয়ারই ঝুঁকি থাকে। এটি বাস্তবায়নের জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করছি, এই দাবি বাস্তবায়নে আমাদের সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
পৌর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জাকির হোসেন মীরবহর বলেন,এই পৌরসভাটি “খ” শ্রেনীর পৌরসভা, যার আয়তন প্রায় ২৫ বর্গকিলোমিটার। যা দেশের অন্যান্য অনেক পৌরসভার থেকে কয়েক গুন বেশি বড়।এখানে প্রায় পনের বছর যাবত বিভিন্ন সমস্যার কারনে এসেসমেন্ট করে ট্যাক্স পুন:নির্ধারণ না হওয়ায় পৌরসভার নিজস্ব আয়ও অত্যন্ত কম।সরকারের সামান্য বরাদ্দ,কম ট্যাক্স আয়, বড় প্রকল্প না পাওয়ার মতো সমস্যার কারনে আমরা এগোতে পারছি না।তবে একটি আদর্শ নগর হিসেবে এখানে একটি পার্ক থাকা উচিৎ, আমরা এজন্য চেষ্টা করব। কাউন্সিলর ফিরোজ আলম খান মেয়র মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফুটপাত দখলমুক্ত করার উপর জোর দেন যাতে দ্রুত সময় অন্তত নিরাপদে কিছুটা চলার পথের ব্যবস্থা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন,আসলে পৌরসভাটির আয়তন বর্তমানে বিশাল হলেও এক সময় এর আয়তন ছিলো থানা থেকে চায়না কবর এবং পুরান বাজার থেকে নদী পর্যন্ত, এবং দীর্ঘদিন এটিকে বৈচন্ডী ইউনিয়ন পরিষদে রূপান্তর করে রাখা হয়েছিলো।শরীরচর্চার জন্য চায়না মাঠের পাশে আমরা ওয়াকওয়ে নির্মান করে দিয়েছি,একটি পার্কের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশকরি অতি দ্রুতই নগরবাসীকে সুখবর দিতে পারবো।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যের মাধ্যমে এডভোকেসী সভাটি সমাপ্ত করা হয়।