অনলাইন ডেস্ক : মেয়াদ শেষ হলো নানা ঘটনায় আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদের। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি শুরু হওয়া একাদশ সংসদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল সোমবার। আজ মঙ্গলবার যাত্রা শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের। ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ বিকাল ৩টায়। সংবিধান অনুযায়ী, সরকার ও সংসদের পাঁচ বছরের মেয়াদ গণনা শুরু হয় সংসদের প্রথম বৈঠকের দিন থেকে।
দ্বাদশ সংসদ প্রায় সব ধরনের হিসাব-নিকাশ, বিশ্লেষণ ও সমীকরণেই ‘অন্যরকম’। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র পাঁচটি দলের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে নতুন এই সংসদে। আবার, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চার বারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগেরই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ রাজনৈতিক মিত্র সংসদে প্রতিনিধি থাকা অবশিষ্ট চারটি দল।
নওগাঁ-২ আসন ছাড়া ২৯৯টি আসনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এককভাবেই পেয়েছে ২২৩টি। আর বিজয়ী স্বতন্ত্র ৬২ জনের মধ্যেও ৫৭ জনই আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা। সেই হিসাবে, ২৯৯ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মূলত ‘আওয়ামী লীগ দলীয়’ সংসদ সদস্য। দল, দলীয়-স্বতন্ত্র ও জোট মিলিয়ে দ্বাদশ সংসদে কার্যত আওয়ামী লীগেরই সংসদ সদস্য ৯৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল একপক্ষীয়। গত ১৭ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলেছে, ‘‘এবারের নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এ নির্বাচনের ফলে গণতান্ত্রিক অবনমনের অভিজ্ঞতা এবং নির্বাচনি কৌশল ও অভিনবত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে বিবেচিত হবে।”
প্রতিনিধিত্ব রয়েছে মাত্র পাঁচটি দলের
এবারের নির্বাচনে ২৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও সংসদে প্রতিনিধিত্ব পেয়েছে আওয়ামী লীগসহ মাত্র পাঁচটি দল। ২৯৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন ২২৩টিতে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৬২টি আসনে। ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে জাতীয় পার্টি (জাপা) পেয়েছে ১১টি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) রেজাউল করিম তানসেন এবারও এমপি হয়েছেন। এর বাইরে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রথম বারের মতো এমপি হয়েছেন নিজ দলীয় প্রতীক ‘হাতঘড়ি’ মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
২৮০ জনই আওয়ামী লীগের
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ২২৩টি আসন প্রাপ্তির পাশাপাশি অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে ৬২টি আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে ৫৯ জন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। ৫৯ জনের মধ্যে ৫৭ জনেরই আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো স্তরের দলীয় পদ রয়েছে। ২২৩ আর ৫৭ মিলে ২৮০ জনই সরাসরি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা।