শাহীন আলম, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে অবস্থিত ইনসাফনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। যে বিদ্যালয়টির মাধ্যমে ওই এলাকার অবহেলিত চরাঞ্চলবাসীর ছেলেমেয়েরা লিখা পড়া করে হয়ে উঠছে দিনদিন সুশিক্ষায় শিক্ষিত।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা দিয়েছে বিদ্যালয়টির পাঁচটি পদে নতুন নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মুখে রয়েছেন বিদ্যালয়টির বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ভাগযোত তালতলা এলাকা নিবাসী নজরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান।
এতে করে অনেকটাই ফাটা বাঁশের চিপার মধ্যে পড়ে রয়েছে বিদ্যলিটির প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদ।
সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যে সমন্বয় হীনতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সঠিক শিক্ষা কার্যক্রম ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়টির সভাপতি মেহেদী হাসানের মামাতো ভাই কান্দির পাড়া গ্রামের পালু মন্ডলের ছেলে নান্টুকে অফিস সহায়ক পদে, শম্পা খাতুন কে আয়া পদে, ইনসাফনগরের সুজাউদ্দিনের ছেলে রায়হানকে নিরাপত্তা প্রহরী, কান্দির পাড়া গ্রামের আলেক এর ছেলে আবু তালেব কে পরিচ্ছন্ন কর্মী ও দাড়ের পাড়া গ্রামের নিবাসী আব্দুল আল মামুন সেন্টুর স্ত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে বর্তমান সভাপতি।
আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যাদেরকে সভাপতি একক সিদ্ধান্তে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দিতে চাচ্ছে তারা সবাই সভাপতি মেহেদী হাসানের পরস্পর নিকটাত্মীয়।
তাছাড়াও পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বলে মুকুল মোল্লার ছেলে আসাদুলের কাছ থেকেও নিয়েছে মোটা অংকের টাকা এছাড়াও অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে ওই সকল পদে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে বলে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এমন অবস্থায় উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকায় বসবাসকারী চাকরি প্রত্যাশী এক ব্যক্তি জানতে পারে যে বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান পাঁচটি পদে চাকরি দেবে বলে এলাকার অনেক লোকজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে সে কোন কুল না পেয়ে তারাগুনিয়া এলাকায় মেহেদী হাসানকে পেলে তাকে আটকে রেখে তার টাকা উদ্ধার করে নেয়।
এ সকল বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদের সাথে প্রতিবেদক কথা বললে তিনি জানান, এই বিদ্যালয়ে আমি নতুন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছি, এখনো আমার বেতন স্কেল চালু হয়নি, আর আমার বেতন স্কেল চালু হতে প্রয়োজন সভাপতির স্বাক্ষর সেই স্বাক্ষর না করে সভাপতি মেহেদী হাসান আমাকে অনেকটাই জিম্মি করে রেখেছে তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
অন্যদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান বেপরোয়া অবস্থানে থেকে বিদ্যালয়টির পাঁচটি পদে টাকার বিনিময়ে নিজস্ব আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি ওই সকল পদেই চাকরি দিবে বলে ইউনিয়ন ব্যাপি বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রত্যাশী লোকজনের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে।
যার কারনে বিদ্যালয়টির নিয়োগ পরীক্ষার ডেট একাধিকবার পিছিয়েছে যার কোন সমাধান আসেনি আজ পর্যন্ত।
এলাকাবাসীর দাবি সঠিক নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিদের বিদ্যালয়টিতে নিয়োগ দেওয়া হোক। যেখানে কোন অভিযোগ থাকবে না নিয়োগ বাণিজ্যের।
এ সকল বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি মেহেদী হাসানের মুঠো ফোনে কল দিলে তার নাম্বারটি বন্ধ দেখায়।
দৌলতপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরদার মো. আবু সালেক অবসরজনিত কারণে দপ্তরের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।