বার্তা প্রবাহ ডেস্ক : ব্রি ধান-৭৫ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ ধান স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন। এ ধান সুগন্ধি। ধানের চাল চিকন। ভাত ঝরঝরে হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৭৫ চাষাবাদে ২০% সার কম লাগে। সুগন্ধি ও চিকন জাতের এ ধান বাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই কৃষক এ ধান চাষাবাদ করে লাভবান হন। খেত থেকে এ ধান কাটার পর কৃষক রবি শস্য চাষাবাদ করতে পারেন। আগাম এ জাতের ধান চাষাবাদ করে কৃষক দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি ও তিন ফসলি জমিকে চার ফসলি জমিতে রূপান্তর করতে পারেন। তাই গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলায় এ ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কার্যালয় থেকে গোপালগঞ্জ নড়াইল এবং বাগেরহাট জেলার ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্রির জাত কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয়করণে কাজ করা হচ্ছে। এ বছর আমরা গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাটে ব্রি ধান-৭৫-এর ১০২ বিঘা জমিতে ১০২টি প্রদশনী প্লট করেছিলাম। প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) এ জাতের ধান ১৯ মণ থেকে ২৩ মণ পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। কৃষক পর্যায়েও এ জাতের ধানের চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অন্য সাইন্টিফিক অফিসার সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, মাত্র ১১০ দিনে বিঘাপ্রতি ১৯-২৩ মণ ধান পেয়ে খুশি গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলার কৃষক। ধানে পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই। সুগন্ধি জাতের এ ধান চাষের পর কৃষক জমিতে রবি শস্য চাষাবাদ করেন। কৃষকের কাছে ব্রি ধান-৭৫ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, বীজ সরবরাহ পেলে আমরা এ জাতের ধান চাষ কোটালীপাড়া উপজেলায় ছড়িয়ে দেব। এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষক লাভবান হবেন। কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবুল কালাম, সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান এ ধানের চাল চিকন হয়। ভাত হয় ঝরঝরে। এ ভাত রান্নার সময় সুগন্ধ বের হয়। আমন মৌসুমে একমাত্র সুগন্ধি চাল এটি। আমরা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শ, বীজ-সার ও সহায়তা নিয়ে ব্রি ধান-৭৫ চাষ করেছি। উচ্চ ফলনশীল এ ধান চাষে সার খরচ ২০ ভাগ কম লেগেছে। এ ধান চাষ করে একই জমিতে বছরে তিন থেকে চারটি ফসল করতে পারি। তাই আমাদের দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকও এ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আমরা আগামী বছর আরও বেশি জমিতে এ ধানের চাষাবাদ করব।