অনলাইন ডেস্ক : প্রকৃতিতে শুভ্রতা ছড়ানো পাখি বড় সাদা বক হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সবার পরিচিত নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক এ বড়বক বিপন্নের পথে। মানুষের খাদ্য ও অনুকূল পরিবেশের কারণে বড় সাদা বক আগের মতো দেখা যায় না।
জানা গেছে, দেশে সাধারণত কানা বা কানিবক, গো-বক, ছোট সাদা বক, মাঝারি সাদা বক, বড় সাদা বক, বেগুনি বক, বৃহৎ বা মহাকায় বক, নিশিবক, বাঘাবক রয়েছে। নিশিবক বা বাঘাবক ছাড়া অন্য সব বকই দিবাচর। সর্বত্র ও সহজ দৃষ্ট হলো কানিবক, ছোট সাদা বক ও গো-বক। তবে বড় সাদা বক এখন তেমন একটা দেখা যায় না।
বক জলাভূমিতে বিচরণকারী পাখি। এদের দীর্ঘ পা, গলা-মাথা সরু ও লম্বা এবং ঠোঁট চোখা। এদের পালক সাধারণত সাদা। এক সময় রাজকীয় পোশাক ও টুপিতে বকের পালক ব্যবহৃত হতো। সারা পৃথিবীতে আট প্রজাতি বক রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির। বক সাধারণত মাছ, ঝিনুক, কাঁকড়া, জলজ পোকা ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। খাল, বিল, পুকুর, হ্রদ, ঝিল, হাওর-বাঁওড়, নদী, সমুদ্র উপকূল ইত্যাদি অঞ্চলেই এদের বসবাস। এ ছাড়া, বাঁশঝাড়ে এদের দলবদ্ধভাবে বাস করতে দেখা যায়।
বর্ষার শুরুতে এরা একবারই প্রজনন করে। এরা একসঙ্গে দুই থেকে পাঁচটি ডিম দেয়। ডিম দেওয়ার এক সপ্তাহের ভিতর ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং সপ্তাহের ভিতর বাচ্চারা উড়তে শেখে। বিশ্রামের সময় গলা প্রসারিত আর ওড়ার সময় গুটিয়ে যায়, কর্মরত অবস্থায় গলা খাড়া বা আধা-গুটানো থাকে। পুচ্ছ সাধারণত খাটো, তাতে পুচ্ছপালক থাকে। দীর্ঘ ও প্রশস্ত পাখনায় পালক থাকে। সাধারণত এরা পানিতে অথবা পানিতে ভাসমান বা পানি থেকে উঁচানো কোনো বস্তুর ওপর ঠায় বসে থাকে এবং সামনে দিয়ে শিকার যাওয়ার সময় হঠাৎ শিকারকে ঠোঁট দিয়ে ধরে ফেলে।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এক সময় আমাদের দেশে প্রচুর বড় সাদা বক ছিল। আবাসস্থল ও খাদ্য সংকটের কারণে বড় সাদা বক আজ বিপন্ন। এদের রক্ষায় আবাসস্থল ও খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।