ফৌজি হাসান খান রিকু : মুন্সীগঞ্জের প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের ভোটার স্বাক্ষর, গোপন তথ্য ফাঁস ও সমর্থকদের মারধরের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা।
শনিবার (২ ডিসেম্বর) মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক সফিউদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা।
অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা লিখিত বক্তব্যে বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্রের সাথে তিনি এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনযুক্ত কাগজ দাখিল করেন। গতকাল (১ ডিসেম্বর) তালিকা যাচাইবাছাই কালে আমার সমর্থিত ভোটারের মধ্য থেকে ১০ জনকে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ওই ১০ জনের তথ্য গোপন রাখার পরিবর্তে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রাসেদুজ্জামান নির্বাচন প্রতিপক্ষ চক্রের নিকট তুলে দেয়। পরে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাহিদ খান ওই তালিকা ধরে সে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। আমার পক্ষে স্বাক্ষর দেওয়ার কারণে তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর হুমকি প্রদান করা হয়। যাতে স্বাক্ষর প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করে যাচাইবাছাইয়ে আমার মনোনয়নটি অগ্রহণযোগ্য হয়।
তিনি আরও বলেন, সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির বিভিন্ন সমর্থকরা দুই উপজেলায় তার সমর্থকদের মারধর করছে। যেন তারা আমার পক্ষে কাজ করতে না পারে। এর প্রতিকার চেয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছি। এ বিষয়ে যথাযথা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে এড. সোহানা তাহমিনার কর্মী, সমর্থক ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
টঙ্গীবাড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মো. রাসেদুজ্জামান জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনের তথ্যসংক্রান্ত বিষয়ে আমার সাথে কোনো প্রার্থীর কথা হয়নি। তিনি অসত্য তথ্য দিয়েছেন।
ভয়ভীতির অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাহিদ খান বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। এখনো নৌকার পক্ষে কাজ করছি। আমার অবস্থানের কারনেই হয়তো আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে। আমি মারধর ভয়ভীতি এসব কাজ করিনি। এ বিষয় তো আমি জানিই না।
জানাগেছে, টংগিবাড়ী-লৌহজং দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে গত সংসদ নির্বাচনে এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এড. সোহানা তাহমিনা। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এড. সোহানা তাহমিনা দলীয় সকল কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে তৃনমূল নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে একদিকে যেমন দলকে শক্তিশালী করছেন। অন্যদিকে নিয়মিত গণসংযোগের মাধ্যমে তিনি বর্তমান সরকারের সাফল্য ও উন্নয়ন চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরেছেন। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উঠান বৈঠক, গণসংযোগ, দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে চা-চক্র, স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভাও করছেন তিনি। সামাজিক অনুষ্ঠানেও তিনি নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। ইতিমধ্যে তিনি টঙ্গীবাড়ী ও লৌহজং উপজেলা নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের প্রতিটি এলাকার মানুষের মন জয় করেছেন। এড. সোহানা তাহমিনা নির্বাচনী এলাকায় শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। দল ও জনকল্যাণে কাজ করার কারণে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছেও তিনি কর্মী বান্ধব নেত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি ২০১২ সাল থেকে টঙ্গীবাড়ী ও লৌহজং উপজেলায় নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এড, সোহানা তাহমিনা’র কর্মী ও সমর্থকদের দাবি, দীর্ঘদিন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত আছেন। তৃনমূলে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি ভোটার এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আসন্ন নির্বাচনে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তার জনপ্রিয়তায় হিংসান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষ তার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কর্মী ও সমর্থকরা।